স্বাস্থ্য

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম ও ঘরোয়া উপায়

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম (Paikhana Clear Korar Tablet Name) ও ঘরোয়া উপায়! অস্বস্তি ও শরীরের ভেতর জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ মুক্ত করতে পায়খানা ক্লিয়ার করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু আমাদের অনেকেই মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগে থাকেন। খাবার বা দৈনন্দিন জীবনযাপনের কারণে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে কিছু ওষুধ ও ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।


পায়খানা ক্লিয়ার করার কিছু পরিচিত ট্যাবলেটের নাম

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ওষুধ বাজারে প্রচুর পাওয়া যায়। তবে, কোনো ট্যাবলেট গ্রহণ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিচে কয়েকটি সাধারণভাবে ব্যবহৃত ট্যাবলেটের নাম উল্লেখ করা হলো:

  1. ডুলকোল্যাক্স (Dulcolax):
    ডুলকোল্যাক্স একটি জনপ্রিয় ল্যাক্সেটিভ ট্যাবলেট যা অন্ত্রের চলন বাড়াতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর।
  2. মুভিকল (Movicol):
    মুভিকল পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়ার পাউডার ফর্মে পাওয়া যায়। এটি অন্ত্রের পানি ধরে রাখে এবং মল নরম করতে সাহায্য করে।
  3. ল্যাকটুলোজ (Lactulose):
    ল্যাকটুলোজ একটি সুরক্ষিত ল্যাক্সেটিভ যা অন্ত্রে পানির মাত্রা বাড়িয়ে মল নরম করতে এবং সহজে বের করতে সাহায্য করে।
  4. সেনোকট (Senokot):
    এটি একটি প্রাকৃতিক ভেষজ ল্যাক্সেটিভ যা অন্ত্রের পেশির চলন বাড়িয়ে দেয়, ফলে মল বের করতে সুবিধা হয়।
  5. ইসপাগুল (Isabgol):
    ইসপাগুলের ভূষি প্রচুর ফাইবারসমৃদ্ধ এবং এটি মল নরম করতে এবং সহজে বের করতে সহায়ক।

পায়খানা ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়

ওষুধের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় আছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর হতে পারে। নিচে কয়েকটি সহজ ও প্রাকৃতিক পদ্ধতি তুলে ধরা হলো:

Paikhana Clear Korar Tablet Name

  1. গরম পানিতে লেবুর রস:
    প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এটি অন্ত্রের কার্যকলাপ বাড়ায় এবং মল সহজে বের হতে সাহায্য করে।
  2. তেল ও ঘি:
    এক চামচ অলিভ অয়েল বা ঘি খালি পেটে খাওয়া অন্ত্রের পেশিকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে এবং মল নরম করে।
  3. ইসপাগুলের ভূষি:
    রাতে এক গ্লাস পানির সাথে ইসপাগুলের ভূষি মিশিয়ে পান করুন। এটি একটি কার্যকর ফাইবার সমৃদ্ধ উপাদান যা মল নরম করে এবং সহজে বের হতে সাহায্য করে।
  4. আলুবোখারা (Prune) বা কিসমিস:
    আলুবোখারা এবং কিসমিসে প্রচুর ফাইবার থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক। রাতে কিছু আলুবোখারা বা কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করুন এবং ফলগুলো খেয়ে নিন।
  5. পানি ও তরল জাতীয় খাবার:
    প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক। এছাড়াও, ফলের রস ও তরল জাতীয় খাবার অন্ত্রকে আর্দ্র রাখতে সহায়ক।
  6. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার:
    শাকসবজি, ফলমূল এবং ডাল ফাইবারে ভরপুর। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রের পেশিগুলোর চলন বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক।
  7. ব্যায়াম:
    নিয়মিত ব্যায়াম অন্ত্রের চলন সচল রাখতে সাহায্য করে। হাঁটা, দৌড়ানো বা যোগব্যায়াম কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে কার্যকর।

সতর্কতা ও পরামর্শ

  • যেকোনো ধরনের ল্যাক্সেটিভ ট্যাবলেট নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • অতিরিক্ত ল্যাক্সেটিভ বা ঘন ঘন ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন, কারণ এটি পুষ্টিহীনতা বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।

উপসংহার

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ওষুধের পাশাপাশি ঘরোয়া পদ্ধতি অনেক সময় কার্যকর হতে পারে। তবে দেহের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বজায় রাখতে এবং সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন সঠিক খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত থাকতে চেষ্টা করুন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বজায় রাখতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button