রবীন্দ্রনাথের প্রেমের বিখ্যাত উক্তি, ও প্রেম নিয়ে সেরা কবিতা কালেকশন ২০২৫ (Rabindranath Premer Ukti & Kobita 2025)
রবীন্দ্রনাথের প্রেমের বিখ্যাত উক্তি, ও প্রেম নিয়ে সেরা কবিতা কালেকশন ২০২৫ (Rabindranather Premer Ukti & Kobita 2025)! প্রিয় বন্ধুগণ প্রেম আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর, হ্যাঁ বন্ধুরা আপনি কি প্রেমের সেরা উক্তিগুলো খুজতেছেন তাহলে আপনাকে আমরা বলব আমাদের এই আর্টিকেল থেকে আপনি প্রেমের সেরা উক্তিগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন। আর প্রেমের উক্তিগুলো এই আর্টিকেলে দেওয়া হবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের বিখ্যাত উক্তি গুলো আপনি রবীন্দ্রনাথের প্রেমের বিখ্যাত উক্তিগুলো একসাথে এই আর্টিকেল থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে প্রেম এমন একটি বিষয় যা আপনারা সবাই অবগত আছেন যে বর্তমান সময়ে এই আধুনিক যুগে সবাই একটা হলেও প্রেম করে আর প্রেমের যেকোনো বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি মানুষ সাচ করে থাকে অনলাইনে, কারণ প্রেমের বিষয়গুলো সবাই সাজিয়ে গুজিয়ে সুন্দরভাবে লিখতে পারে না। তখন তাকে সব সমস্যার সমাধান গুগলের সাহায্য নিয়ে উক্তিগুলো সংগ্রহ করতে হয়। তবে আপনি যেহেতু আমাদের এই আর্টিকেলে একবার এসে গেছেন এখান থেকে আপনি প্রেমের রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত উক্তিগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন।
রবীন্দ্রনাথের প্রেমের বিখ্যাত উক্তি, ও প্রেম নিয়ে সেরা কবিতা কালেকশন ২০২৫ (Rabindranath Premer Ukti & Kobita 2025)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাঙালি সাহিত্যজগতের চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব, প্রেম ও ভালোবাসার অনুভূতিকে সেরা শব্দচয়নে প্রকাশ করেছেন। তাঁর কবিতা ও উক্তি মানব হৃদয়ের গভীরতম অনুভূতিকে স্পর্শ করে। ২০২৫ সালে প্রেম দিবসে, রবীন্দ্রনাথের কিছু অনন্য প্রেমের উক্তি ও কবিতা আপনাকে প্রেমের স্রোতে ভাসাবে।
রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত প্রেমের উক্তি (Rabindranath Premer Ukti)
১. “যে প্রেম স্বর্গ থেকে আসে, সে প্রেম কখনো হারায় না।”
প্রেম মানে ত্যাগ, বিশ্বাস, এবং অন্তর্গত শান্তি।
২. “ভালোবাসা এমন এক শক্তি, যা পৃথিবীর সব বাধা অতিক্রম করতে পারে।”
সত্যিকারের প্রেমের শক্তি অপরিসীম।
৩. “তুমি আমার গভীরতা, তুমি আমার আকাশ। তোমাকে পেলে পৃথিবী পূর্ণ হয়।”
এই উক্তি প্রতিটি প্রেমিকের হৃদয়ে দাগ কাটে।
৪. “ভালোবাসা কখনো তার গন্তব্য হারায় না, যদি সে সৎ হয়।”
প্রেমে সততা এবং বিশ্বাস অপরিহার্য।
৫. “তোমার চাওয়া, তোমার পাওয়া—সবকিছুতেই আমি মিশে আছি।”
এই উক্তি প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কের মাধুর্য ফুটিয়ে তোলে।
রবীন্দ্রনাথের প্রেমের সেরা কবিতা কালেকশন (Rabindranath Premer Kobita Collection)
১. চিত্ত যেথা ভয়শূন্য
“চিত্ত যেথা ভয়শূন্য
উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত,
যেথা গৃহের প্রাচীর আপন প্রাঙ্গণতলে দিবস-রজনী বিচ্ছিন্ন করে না।”
এই কবিতায় প্রেমের মুক্তি ও মানবতার উত্থান ফুটে ওঠে।
২. তুমি রবে নীরবে
“তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম,
নিভৃত পূজার চরে।
বীণা বন্ধুর মতো বাজিবে শ্রবণে,
তোমারি মাধুরী ধরে।”
প্রেমিকাকে হৃদয়ে চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখার আকাঙ্ক্ষা এই কবিতায় স্পষ্ট।
৩. আমার এ গান চিরদিন রবে
“আমার এ গান চিরদিন রবে
তোমারই কন্ঠহারা তারায়।
আমার এ জীবন চিরদিন ভাসুক
তোমারই স্রোতে।”
এই কবিতা প্রেমের অনন্ত স্রোত ও আত্মত্যাগের মাধুর্য তুলে ধরে।
৪. তোমায় দেখা যদি হয় নাই সম্ভব
“তোমায় দেখা যদি হয় নাই সম্ভব,
তবে তব কল্পনাতে দিবস-রজনী,
জ্বালায়ে রাখি দীপ।”
এই কবিতায় অনুপস্থিত প্রিয়জনের প্রতি গভীর আকর্ষণ ও বিরহের ছোঁয়া রয়েছে।
৫. মধুর গান ধরে রাখো প্রাণে
“মধুর গান ধরে রাখো প্রাণে,
তোমারি মাঝে চিরদিন।
তোমার হাসি আমার স্বপ্নে বাজুক,
তোমার প্রেমে থাকুক জীবন।”
প্রেমের এই চিরন্তন আবেদন আজও সকলের হৃদয়ে আলোড়ন তোলে।
রবীন্দ্রনাথের প্রেমের বিখ্যাত উক্তি গুলো
আপনি কি কারো প্রেমে পড়েছেন আর প্রেম নিয়ে সুন্দর উক্তি দিতে চাচ্ছেন, কিন্তু সুন্দর উক্তিগুলো খুঁজে পাচ্ছেন না তাহলে আপনাকে আমরা সাজেস্ট করব আপনারা আমাদের এই আর্টিকেল থেকে রবীন্দ্রনাথের প্রেমের সেই বিখ্যাত উক্তিগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন। তাই আপনারা আর্টিকেলটি একটু ধৈর্য সহকারে ভালোভাবে পড়বেন, এবং প্রেম নিয়ে সেরা উক্তিগুলো এই আর্টিকেল থেকে সংগ্রহ করুন নিচে তা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হল —
- আনন্দকে ভাগ করলে দুটি জিনিস পাওয়া যায়; একটি হচ্ছে জ্ঞান এবং অপরটি হচ্ছে প্রেম
- পৃথিবীতে বালিকার প্রথম প্রেমের মতো সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছুই নাই, প্রথম জীবনে বালিকা যাকে ভালবাসে তাহার মতো সৌভাগ্যবানও আর কেহই নাই। যদিও সে প্রেম অধিকাংশ সময়ে অপ্রকাশিতই থেকে যায়, কিন্তু সে প্রেমের আগুন সব বালিকাকে সারা জীবন পোড়ায়।
- কাঁচা আমের রসটা অম্লরস— কাঁচা সমালোচনাও গালিগালাজ। অন্য ক্ষমতা যখন কম থাকে তখন খোঁচা দিবার ক্ষমতাটা খুব তীক্ষ্ণ হইয়া উঠে।
- স্বামীরা প্রেমিক হতে অবশ্যই রাজি, তবে সেটা নিজের স্ত্রীর সাথে নয় | নিজের স্ত্রীর প্রেমিক হওয়ার বিষয়টা কেন জানি তারা ভাবতেই চায়না।
- যার সঙ্গে মানুষের লোভের সম্বন্ধ তার কাছ থেকে মানুষ প্রয়োজন উদ্ধার করে, কিন্তু কখনো তাকে সম্মান করে না।
- আমি তোমাকে অসংখ্যভাবে ভালবেসেছি, অসংখ্যবার ভালবেসেছি। এক জীবনের পর অন্য জীবনেও ভালবেসেছি। বছরের পর বছর, সর্বদা, সব সময়ে।
- এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলে না, শুধু সুখ চলে যায়
- বিয়ে করলে মানুষকে মেনে নিতে হয়, তখন আর গড়ে নেবার ফাঁক পাওয়া যায় না।
- মানুষ পণ করে পণ ভাঙিয়া ফেলিয়া হাঁফ ছাড়িবার জন্য
- ভালবাসা কথাটা বিবাহ কথার চেয়ে অধিক বেশি জ্যান্ত।
- নবসৃষ্টির যত দোষ যত ত্রুটিই থাকুক-না কেন, মুক্তি কেবল ঐ কাঁটাপথেই। বাঁধা সড়ক গোলাপদলের পাপড়ি দিয়ে মোড়া হলেও সে পথ আমাদের পৌঁছিয়ে দেবে শেষটায় চোরা গলিতেই।
- মানুষ যে কেবল নিজের মধ্যে আছে তা নয়, সকলে তাকে যা জানে সে জানার মধ্যেও সে অনেকখানি আছে। তাই ‘আপনাকে জানো এই কথাটা শেষ কথা নয়, আপনাকে জানাও এটাও খুব বড়ো কথা।
- সামনে একটা পাথর পড়লে যে লোক ঘুরে না গিয়ে সেটা ডিঙ্গিয়ে পথ সংক্ষেপ করতে চায় – বিলম্ব তারই অদৃষ্টে আছে।
- তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি।
- আগুনকে যে ভয় পায়, সে আগুনকে ব্যবহার করতে পারে না।
- নারীর প্রেমে মিলনের গান বাজে, পুরুষের প্রেমে বিচ্ছেদের বেদনা
- আনন্দকে ভাগ করলে দুটি জিনিস পাওয়া যায়, একটি হচ্ছে জ্যান, অন্যটি হচ্ছে প্রেম
- তুমি যদি না দেখা দাও, করো আমায় হেলা; কেমন করে কাটে আমার এমন বাদলবেলা
- সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ।
প্রেম নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সেরা কবিতা গুলো
আমরা এই আর্টিকেলে চেষ্টা করেছি প্রেম নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সেরা কবিতাগুলো একসাথে সংগ্রহ করতে পারবেন সেজন্য আপনাকে অবশ্যই আর্টিকেলটি একটু ধৈর্য সহকারে টেনে টেনে না পড়ে মনোযোগ সহকারে পরার বলা হচ্ছে, নিচে রবীন্দ্রনাথের প্রেম নিয়ে সেরা কবিতাগুলো তুলে ধরা হলো —
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সোনার তরী
গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খরপরশা।
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।
একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা,
চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসীমাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা
প্রভাতবেলা–
এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা।
গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে,
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা-পালে চলে যায়,
কোনো দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙে দু-ধারে–
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্ বিদেশে,
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে।
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুশি তারে দাও,
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে।
যত চাও তত লও তরণী-‘পরে।
আর আছে?– আর নাই, দিয়েছি ভরে।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে–
এখন আমারে লহ করুণা করে।
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই– ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি–
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গীতাঞ্জলি
প্রেমের দূতকে পাঠাবে নাথ কবে।
সকল দ্বন্দ্ব ঘুচবে আমার তবে।
আর-যাহারা আসে আমার ঘরে
ভয় দেখায়ে তারা শাসন করে,
দুরন্ত মন দুয়ার দিয়ে থাকে,
হার মানে না, ফিরায়ে দেয় সবে।
সে এলে সব আগল যাবে ছুটে,
সে এলে সব বাঁধন যাবে টুটে,
ঘরে তখন রাখবে কে আর ধরে
তার ডাকে যে সাড়া দিতেই হবে।
আসে যখন, একলা আসে চলে,
গলায় তাহার ফুলের মালা দোলে,
সেই মালাতে বাঁধবে যখন টেনে
হৃদয় আমার নেরব হয়ে রবে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গীতাঞ্জলি
মেঘের ‘পরে মেঘ জমেছে,
আঁধার করে আসে,
আমায় কেন বসিয়ে রাখ
একা দ্বারের পাশে।
কাজের দিনে নানা কাজে
থাকি নানা লোকের মাঝে,
আজ আমি যে বসে আছি
তোমারি আশ্বাসে।
আমায় কেন বসিয়ে রাখ
একা দ্বারের পাশে।
তুমি যদি না দেখা দাও,
কর আমায় হেলা,
কেমন করে কাটে আমার
এমন বাদল-বেলা।
দূরের পানে মেলে আঁখি
কেবল আমি চেয়ে থাকি,
পরান আমার কেঁদে বেড়ায়
দুরন্ত বাতাসে।
আমায় কেন বসিয়ে রাখ
একা দ্বারের পাশে।
অনন্ত প্রেম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি
শত রূপে শত বার
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার।
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয়
গাঁথিয়াছে গীতহার,
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়,
নিয়েছ সে উপহার
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার।
যত শুনি সেই অতীত কাহিনী,
প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
অতি পুরাতন বিরহমিলনকথা,
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে
দেখা দেয় অবশেষে
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া
তোমারি মুরতি এসে,
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি
যুগল প্রেমের স্রোতে
অনাদিকালের হৃদয়-উৎস হতে।
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা
কোটি প্রেমিকের মাঝে
বিরহবিধুর নয়নসলিলে,
মিলনমধুর লাজে—
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।
আজি সেই চিরদিবসের প্রেম
অবসান লভিয়াছে
রাশি রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে।
নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ,
নিখিল প্রাণের প্রীতি,
একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে
সকল প্রেমের স্মৃতি—
সকল কালের সকল কবির গীতি।